জেনে নিন, দীর্ঘ দাম্পত্য রক্ষার সহজ উপায় !
সবারই আশা থাকে সুখী ও দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে এর বাস্তব উদাহরণ। বেড়ে চলছে বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যা। তুচ্ছ কারণে শুরু হচ্ছে সম্পর্কের টানাপোড়েন। সুখী সমৃদ্ধ ও দীর্ঘ দাম্পত্য যেন সুদূর দীপবাসী। কিন্তু বাস্তব সত্য হল, সামান্য মানসিকতার পরিবর্তনে তা আসতে পারে আপনার হাতের ছোঁয়ার নাগালেই। আসুন জেনে নেয়া যাক দীর্ঘ দাম্পত্য রক্ষার সহজ উপায়।
- রোমান্সে হোন রঙিন
একই সঙ্গে বসবাস করছেন অথচ আপনাদের রোমান্সে পড়েছে ঘাটতি। প্রথম দিকে এর কুপ্রভাব টের না পেলেও যেদিন এ্যটোম বোম ফাটবে সেদিন টের পাবেন। বুঝবেন এর ভয়াবহতা কতো। কারণ দীর্ঘদিন আপনার সঙ্গীর শারীরিক মানসিক চাহিদার প্রতি গুরুত্বহীনতা মোটেও কাম্য নয়। এতে একে অপরের প্রতি অনাস্থা আর বিতৃষ্ণা বাড়িয়ে দেয়। যৌন ও মানসিক চাহিদা মিটাতে সঙ্গী পরকীয়ায় আসক্ত হতে পারে। ঝগড়া বিবাদ হতে পারে নিত্যদিনের সঙ্গী। তাই সঙ্গীর সঙ্গে রোমান্স করুন। তাকে সাধ্য মতো ভালো লাগা উপহার দিন। তার চাহিদা বোঝার চেষ্টা করুন।
- পারস্পারিক মেলবন্ধন
সঙ্গীর সঙ্গে যোগাযোগের ঘাটতি হলে ধীরে ধীরে তা সমূলে সম্পর্ককে ধ্বংস করে। সেটা জেনেই ঘাটতি হোক আর না জেনেই ঘাটতি হোক । দাম্পত্য জীবনে একে অপরের কাছে স্বচ্ছতার বিষয়টি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রাখা জরুরি। পেশাগত ব্যস্ততা, সন্তান লালন-পালন, শরীরচর্চা, ঘরের কাজ কিম্বা সামাজিক কাজ নিয়ে শত ব্যস্ততার মাঝেও তার জন্য কিছু সময় অবশ্যই বরাদ্দ রাখুন। মূল্যবান এ সময়টুকু ব্যয় করুন একেবারেই নিবিড় অন্তরঙ্গে। সেসময় শুধু তার গুরুত্বই বজায় রাখুন। সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলুন মন খুলে।
- একে অপরের প্রাধান্য দেয়া
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের মতে, ভালোবাসার মূল্য বা গভীরতা পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তবে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আর প্রাধান্যই পারে সে সম্পর্ককে মজবুত করতে। সঙ্গীকে শ্রদ্ধা করলে বন্ধন দৃঢ় হয়। সম্পর্কের স্থায়িত্ব বাড়ে প্রাধান্য দেয়ায়। তাই যাকে আপনি বিয়ে করেছেন, অবশ্যই তাকে জীবনের অপরিহার্যের সম্মান দিন। সঙ্গীর অনুভূতি ও সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন। তবে নৈতিকতার উর্ধ্বে কারও যাওয়া ঠিক নয়। অর্থাৎ দুজনেই নৈতিকতা বজায় রেখে নিজেদের সম্পর্ক ধরে রাখুন। দেখবেন দাম্পত্য আরও মধুর হয়ে গেছে।
- অনেকের ধারণা
ছাড় দেয়ার অর্থ নিজের দুর্বলতা প্রকাশ। এ জন্য কোনো অবস্থাতেই তারা সমঝোতার পথে আসতে রাজি নন। বাস্তবতা হল, জীবনে চলার পথে সব দম্পতিকেই অসংখ্য সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কখনো দুজন দুটি ভিন্ন মতের মাঝে আপনাকে দাঁড়াতে হয়। সব সময় নিজের মতকে প্রাধান্য না দিয়ে সঙ্গীর মতামতকে ভালোমন্দের মানদণ্ডে মাপুন। দুজন মিলে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিন, যাতে আপনারা দুজনই খুশি থাকতে পারেন।ছাড় দেয়ার মানসিকতা
- অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা
নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপনি নির্দিষ্ট কোনো খাতে টাকা জমাতেই পারেন। গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি আপনার সঙ্গীকে জানানোও কিন্তু সমান গুরুত্বপূর্ণ। কোথাও টাকা বিনিয়োগ করলে কিম্বা বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের টাকা ধার দেয়ার প্রয়োজন পড়লে সঙ্গীর কাছে লুকাতে যাবেন না। না হলে সঙ্গী অন্য মাধ্যমে জেনে বিচলিত হতে পারেন। আপনার ওপর থেকে তাঁর বিশ্বাস ও আস্থা হারিয়ে যেতে পারে। এতে করে অযথাই সম্পর্কে ভাঙন ধরতে পারে।
- সঙ্গীর মন রক্ষা
বিয়ের পর শ্বশুর-শাশুড়ি কিম্বা সঙ্গীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বন্ধন দৃঢ় করার চেষ্টা করুন। কাজটি সহজ মনে হলেও আদতে বেশ কঠিন। কোনোভাবেই যদি আপনি সঙ্গীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সহজ হতে না পারেন, তাহলে অন্তত তাদের সঙ্গে আন্তরিক ব্যবহার করুন। মাঝেমধ্যে একসঙ্গে ভোজের ব্যবস্থা করতে পারেন। মনে রাখবেন, দাম্পত্য জীবনে এই আচরণ সঙ্গীর মনে ইতিবাচক ধারণা দিতে সক্ষম।
জেনে নিন, দীর্ঘ দাম্পত্য রক্ষার সহজ উপায় !
Reviewed by sohel
on
December 01, 2014
Rating: